অশান্তির বেড়াজালে পৃথিবী

পৃথিবী নামক স্বর্গে এখন অশান্তি বিরাজমান। তবে এই অশান্তির বীজ অনেক পূর্বেই বপিত হয়েছিল যার রেশ এখনও আছে। সেই পূর্বের অশান্তির সঙ্গে বর্তমানের আশান্তির কিন্তু যোজন যোজন ফারাক রয়েছে। অশান্তি কিন্তু বর্তমানে সৃষ্টির সেরা জীবরাই করছে। পূর্বে সকল অশান্তির দায় দায়িত্ব বর্তাতো শয়তানের উপর। কিন্তু বর্তমানে এর দায় বর্তায় আমাদের উপর। আমরাই শয়তানের দায়ীত্বটুকু পালন করছি আর শয়তান অবসর যাপন করছে। তবে এর থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ ও মত হচ্ছে কিয়ামত। আর কিয়ামতের আলামত শুরু হয়েছে। পৃথিবীর সমস্ত কিতাব ও মনীষিদের বাণী এবং বর্তমানের দৃশ্যমানতার মিল রয়েছে আর এর থেকেই বলতে পারা যায় কিয়ামতের পূর্বালামত শুরু হয়েছে এবং এর শেষ পরিণতির দিকে আমরা এগুচ্ছি। কিয়ামত নিশ্চিত এর থেকে কারোই রেহাই নেই কিন্তু বর্তমানের শয়তানী থেকে রেহাই রয়েছে যদিনা আমরা আমাদের জ্ঞান ও বিবেক – বুদ্দিকে জাগ্রত রেখে আত্মার উপলব্দিকে প্রাধান্য দিয়ে অগ্রসর হই।

সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিপূর্ব পরিকল্পনার শেষাংশ হলো প্রলয়করী কেয়ামত বা  পৃথিবীর সমস্ত কিছু ধ্বংসের দিন। এই দিন সৃষ্টিকর্তা তাঁর সবকিছুকেই ধ্বংস করে দিবে এবং তিনিই একমাত্র স্বমহীমায় থাকবেন। তৎপরবর্তীতে তিনি পুনরায় সমস্ত মৃত মানুষকে জীবিত করে শতভাগ প্রাপ্য বুঝিয়ে দিবেন। প্রাপ্যনুযায়ী বেহেস্ত বা দোযখ বাসিন্দা হিসেবে বসবাসের সুযোগ পাবেন। সুতরাং ঐ কঠিন সত্যটির মুখোমুখি হওয়ার আগেই কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে পৃথিবীবাসীকে। আমরা আজ এক কঠিন সন্ধিক্ষণে দাড়িয়ে মহা প্রলয়ের গন্ধ বা আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি। এই আওয়াজ বা গন্ধ বুঝে করণীয় ঠিক করতে মনযোগী হওয়ার এখন উত্তম সময়। তাই বলতে হয় সময় থাকতে মনা হুশিয়ার। কোরআন হাদিছের আলোকে একটি কথা ভাসমান ছিল যে, কিয়ামতের পুর্বালামত হলো- আপথ পথ হবে, আঘাঠ ঘাট হবে, গ্রামের মোড়ে মোড়ে বাজার/ দোকান হবে, নৈরাজ্য এবং হা হা কার বেড়ে যাবে, সংসারে অমিল, পরিবার, স্বামী/স্ত্রীতেও অমিল, ছেলে/মেয়েতেও অমিল হয়ে বিশৃঙ্খলা বিরাজ করবে, যুবতী মেয়ের সংখ্যা বেড়ে যাবে… আরো কত কি? আর সমস্ত কিতাবের বিশ্লেষণে বলা যায় যে, একদেশ অন্য দেশের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হবে, দেশে দেশে শক্তি ও ক্ষমতার বাহাদুরী প্রদর্শীত হবে, দখল এবং জুলুম অসহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে, প্রকৃতির বিরুপ প্রভাব পড়বে, ভুমিকম্প, জলোচ্ছস হবে, বাবা, ছেলে, মেয়ে, স্ত্রীতে দ্বন্ধ পরিলক্ষিত হবে। মতের অমিল হবে। ক্ষমতা এবং অর্থ ও নারী এই তিনের সংমিশ্রনে মহারণ হবে। আরো কত কিই না ছিল… ঐ বুঝবার উপাদানে। তবে ঐসকল জেনে শুনে এবং দেখে এখন বুঝবার সময় হয়েছে অশনি সংকেতের। তাই শতভাগ নিশ্চিত হয়েই বলা যায় কিয়ামত আসন্ন এবং এর পুর্বালামত শুরু হয়েছে। তাই সকলেই সৃষ্টিকর্তার সিফতে সৃষ্টি মানব সন্তান বা আশরাফুল মাখলুকাত। সময়ের ও জীবনের প্রয়োজনে সৃষ্টিকর্তায় বিলিন হওয়া বা আঁকড়ে ধরে থাকার সময় এখনই। কারণ তারই কাছে আমাদের ফিরে যেতে হবে। আসুন আমরা আরো বিনম্র হই এবং নিজেদেরকে অনুসন্ধান করি আর পৃথিবীর চারিদিকে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিশ্লেষণ করি।

দুনিয়াবী কামিয়ামী হাছিলের সকল মহড়া বন্ধ করুন। নেতা হওয়ার মহড়া, রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাওয়ার মহড়া, কর্মকর্তা হওয়ার মহড়া, রাজ্য দখলের মহড়া, অন্যের ক্ষতি করার মহড়া, নিজেকে সেরা বানাবার মহড়া, ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে থাকার মহড়া এবং পাকাপোক্তকরণের মহড়া বন্ধের উপযুক্ত সময় এখন। তবে এখনও যারা এই উপলব্ধি বুঝতে অপারগ তাদেরকে বিনীতভাবে বলছি তৌবা করুন এবং সৃষ্টিকর্তার নিকট নিজেকে সমর্পন করুন ও সাহায্য কামনা করে মোনাজাত করুন। সৃষ্টিকর্তা আপনাকে নিশ্চিত গন্তর্ব্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। যদি আপনার দ্বারা জাতির উদ্ধার হয় তাহলে তিনি তা করবেন। তিনিই একমাত্র সমস্ত কিছু নিয়ন্ত্রণ করেন এবং এই দুর্যোগ মোকাবিলায় করনীয় ঠিক করবেন। তাঁর ইচ্ছা ও অনিচ্ছায় গুরুত্ব দেয়ার সময় এখন। আমাদের নিজস্ব চিন্তা ও চেতনার বহি:প্রকাশ হলো বর্তমানের অসহিষ্নু উত্তপ্ত বিশ্বব্যবস্থা। তবে এর থেকে রেহাই মিলার একমাত্র রাস্তা হলো সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায় এবং সেই অনুযায়ী অগ্রসর হওয়া। তাই আসুন আমরা সকলে মিলেই এই অশান্তিময় পৃথিবীকে শান্তিতে রূপদান করি এবং এর নিমিত্ত্বে সকল ইতিবাচক কর্মকান্ডগুলো সচল করে আগামীর তরে অগ্রসর হই। তবে প্রক্রিয়ায় অন্তত সৃষ্টির সেরা জীবের সেরা দায়িত্বটুকু পালিত হবে এবং সৃষ্টিকর্তাকে সহায়তাকারী হিসেবে নিজেদেরকে তাঁর সঙ্গে একাত্বকারী হিসেবে পরিগণিত করতে পারব এবং পুনরায় একত্রিকরণের সময় নিজের ভুমিকায় সন্তুষ্টি অর্জনসহ আনন্দ উপভোগ করতে পারবো। পৃথিবীর মানুষদের কষ্ট লাগবে নিজের ভুমিকায় গর্ববোধ হবে। সৃষ্টিকতার গৌরব ও প্রশসংসা এবং মহিমা সর্বলোকে ঘোষিত হবে।

পরিশেষে বলতে চাই আমরাই জানি আমাদের সিমাবদ্ধতা এবং আমরাই জানি আমাদের পঙ্কিলতাগুলো। আমরাই জানি আমাদের অসহায়ত্বগুলো; তাই সময় থাকতেই আমরা আমাদের অসুস্থ্যতার সময়ের অসহায়ত্ব এবং যন্ত্রনা এমনকি প্রতিটি মুহুত্বের কথা চিন্তা করি আর সুস্থ্য হয়ে আগামীর করনীয় ঠিক করার পরিকল্পনাগুলো মনে করি… তাহলেই পৃথিবীর নতুন রূপ যা ইতিবাচক ও কল্যাণকর হওয়ার পুর্বশর্তও বটে। ঐ সময়ের ইচ্ছাই হলো খাঁটি,সৎ, ভাল,মঙ্গলজনক, গ্রহনযোগ্য এবং সকলের জন্য ভালো”। দয়া করে একবার তা উপলব্ধির অভিজ্ঞতা অর্জন করুন এবং সেই মোতাবেক বর্তমান এবং আগামীর করণীয়তে ব্যবহার করুন তাহলেই পৃথিবী শান্তি ও স্থিতিশীলতা এবং নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তায় পরিপূর্ণ হবে। অশান্ত পৃথিবী ফিরে পাবে শান্ত হওয়ার দিশা এবং পরিণত হবে শান্তিময়তায়। ভাল থাকেন এবং পৃথিবীকে শান্ত করণে নিজেকে শান্ত করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.