জোট ও আন্দোলন

জোটগত আন্দোলন যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। তবে এই আন্দোলনের গতি প্রকৃতি প্রতিনিয়ত পরিবর্তীত হচ্ছে। জোটে যুক্ত হওয়ার মূল শর্ত এবং উদ্দেশ্য ও আকাংখার মধ্যেও পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে। আগেকার জোট গঠন হতো সামষ্টিক ও সার্বজনীণ কল্যাণের তরে। আর এখনকার জোট গঠিত হয় বা হচ্ছে নিজেদের স্বার্থ অথবা আখের গোছানোর লক্ষ্যে। তবে এই জোট বেশীদিন স্থায়ী হয়নি এবং হচ্ছেও না। তবে পূর্বের জোট চাওয়া পাওয়ার হিসেবের চেয়ে জনকল্যাণের দিক বিবেচনায় নিজেরা নিজেদের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে স্থায়ী সমাধানে পৌছাতে সক্ষম হয়েছে এবং হয়েছিল বা ঐ ধরণের জোট বর্তমানেও সফল হবে। কিন্তু দুর্ভার্গ্য এইখানে পুর্বের মত স্বার্থহীন জনকল্যাণে নিয়োজিত জোট এখন আর হয়না বা অদুর ভবিষ্যতেও হবে বলে মনে হয় না। তাই তাসের ঘরের মত জোট ভাঙ্গে এবং গঢ়ে আর এই খেলায় সাধারণ জনগণ দুর্ভোগের কবলে পড়ে শিলে পাটা ঘষাঘষি মরিচের জীবন শেষ… এই পরিস্থিতিতে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে।

আমাদের দেশের চলমান রাজনীতিতেও জোটের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে কিন্তু মজবুত ভিত্তি বা জনকল্যাণের তরে এখনও সেই জোট প্রকাশিত হতে পারছে না তাই তাদের ভাঙ্গনের লিখা খেলা এবং জনকল্যাণের স্থলে জনদুর্ভোগ বৃদ্ধিই পাচ্ছে। তাই জনতার আকাঙ্খা পুরণে ব্যর্থ জোটগুলো তাসের ঘরের মতো ভেঙ্গে যাচ্ছে এবং জাগতিক লোভ লালসার বহি:প্রকাশ বাস্তবতায় দৃশ্যমান থাকছে। সেই ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের ১৪ দলীয় জোট কিছুটা হলেও স্বস্তির নি:শ^াস ফেলে বিশ^াস ও আস্থায় দৃশ্যমান থাকছে। তবে তাদের জোট ছিল সামষ্টিক কল্যাণে নিজেদেরকে বিলিয়ে দেয়ার পাশাপাশি নিজেরাও লাভবান হওয়া। আর হয়েছেও তাই। কিন্তু অপরদিকে সামষ্টিক কল্যাণকে বাদ দিয়ে শুধু নিজেদের কল্যাণকে প্রাধান্য দিয়ে ৩৬ বা ৩১ অথবা আরো বেশী দলীয় জোট একের পর এক নেতিবাচক ও লজ্জ্বাজনক চমক দেখাচ্ছে। একেক সময় একেক কথা বলে জনবিভ্রান্তি সৃষ্টি করে যাচ্ছে। যদিও জনগণ তাদের সেই লোভ ও প্রলোভনের কথা জেনে বুঝে সায় দিচ্ছে না তারপরও তারা তাদের কষাঘাত চাপিয়ে দিয়ে নানান দেন দরবার করে যাচ্ছে। যাতে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। বরং দেশের বারোটা বাজছে এবং আগামীতেও বাজার স্থায়ী ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করছে।

জাতির কল্যাণে নিজের স্বার্থ্য ব্যতিরেখে ঐক্যবদ্ধ হওয়া জরুরী। এই জরুরী প্রয়োজনে সারা দেয়া এখন সময়ের দাবী। নিজের সমস্যা নিজেই সমাধান করা উত্তম। কিন্তু তৃতীয় পক্ষের আগমনে সমস্যার সমাধানতো নয়ই বরং সমস্যার ব্যপ্তি বৃদ্ধি পায়। আর সাথে সাথে আস্থা ও বিশ^াস এবং সৌহাদ্যপূর্ণ সম্পর্ক নষ্ট হয়। আর হয়েছেও তাই। পরিবার সমাজ এবং রাষ্ট্র থেকে এই শিক্ষা নেয়া জরুরী। তাই আমাদের সমস্যা আমরাই সমাধান করবো এবং নিজেকে বড় নয় বরং ছোট করে সমাধানে এগিয়ে আসবো। নিজের সম্মান বৃদ্দি বা প্রত্যাশ করলে প্রথমে অন্যকে সম্মান করে দেখাতে হবে। তাই আসুন একে অন্যকে গেঁথে তুলি এবং ভালবাসার বন্ধনে জড়িয়ে যাবতীয় কর্ম সম্পাদন করি। কোনভাবেই অসম্মান বা ক্ষেয়প্রতিপন্ন করে অথবা অন্যের দ্বারা শাসন করানোর নেতিবাচক পন্থা বা পদ্ধতি থেকে বের হয়ে আসি।

চলমান বাংলাদেশের রাজনীতি এবং আগামী নির্বাচন ও জোট ও মহাজোট এবং একদফা এই কোনটিই শুভ নয় বরং সকল অশুভের মধ্যে যেন শান্তির পথে যাওয়ার এই দৃষ্টান্ত। তবে সৃষ্টকর্তা আমাদের সকলকেই ভালবাসেন এবং ক্ষমা করেছেন ও করবেন। তাই আসুন আমরা সৃষ্টিকর্তার সাথে সম্পর্কউন্নয়ন করে আশু সমস্যার সমাধান করি। তবেই সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত সমাধানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা এবং নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তা শতভাগ নিশ্চিত থাকবে। আসুন আমরা সৃষ্টিকর্তা বা আল্লাহ তায়ালার সান্নিধ্যে গিয়ে সকল সমস্যা রাখি এবং তাঁরই সাহায্য কামনা করে; সহায়তা নিয়ে যাবতীয় সমস্যার স্থায়ী সমাধান করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.