ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে শেখ হাসিনার দেখানো পথে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ: রাষ্ট্রপতি

প্রশান্তি ডেক্স ॥ সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেখানো পথে বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তিনি বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার দেখানো পথে আমরা অগ্রগতি ও উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাবো। সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবো। এই অগ্রযাত্রায় শামিল হবো সবাই।’

গত বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে পাবনার ইছামতি নদীতে নৌকাবাইচের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যেও অর্থনীতির নেতিবাচক পরিস্থিতি মোকাবিলা করে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল, বঙ্গবন্ধু টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ সব মেগা প্রকল্পের কাজ সময়মতো শেষ হয়েছে। ইতোমধ্যে এসবের সুফল পেতে শুরু করেছে জনগণ।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নীতি-আদর্শই বাঙালির এগিয়ে যাওয়ার পথ-নির্দেশিকা ও অনুপ্রেরণা জানিয়ে মো. সাহাবুদ্দিন আরও বলেন, ‘বাঙালি বীরের জাতি। আমরা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। তিনি বাংলার মানুষের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য আমৃত্যু সংগ্রাম করেছেন, জেল-জুলুম ও অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছেন। স্বাধীনতার পর দেশকে এগিয়ে নিতে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠিত করতে কাজ শুরু করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। সে লক্ষ্যে অল্প সময়ের মধ্যে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান আমাদের উপহার দিয়েছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের ষড়যন্ত্রের কারণে স্বাধীনতার সাড়ে তিন বছরের মাথায় আমরা জাতির পিতাকে হারাই। এটা ছিল জাতি হিসেবে আমাদের চরম ব্যর্থতা। বঙ্গবন্ধু আমাদের সঙ্গে না থাকলেও তার নীতি-আদর্শই বাঙালির এগিয়ে যাওয়ার পথ-নির্দেশিকা ও অনুপ্রেরণা।’

নৌকাবাইচ গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘নৌকাবাইচ আবহমান বাংলার সমৃদ্ধ সংস্কৃতির একটি ঐতিহ্য। বাংলার আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে আছে লোকসংস্কৃতির অমূল্য বহু উপাদান। এসব লোকসংস্কৃতি ঠিকভাবে লালন করা গেলে বিশ্ব সংস্কৃতি ও সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ হয়ে উঠতে পারে। পাবনা জেলা বাঙালি লোকসংস্কৃতির উর্বর ক্ষেত্র। নৌকাবাইচ আমাদের এলাকার ঐতিহ্যবাহী উৎসব।’

গত কয়েক বছরে পাবনার উন্নয়নে নতুন গতি এসেছে জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘২০০৮ সালে পাবনায় মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হলেও এতদিন হাসপাতাল ছিল না। আজ সকালে পাবনায় ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। পাবনা-ঢাকা ট্রেন চলাচল এই মাসেই শুরুর কথা থাকলেও প্রশাসনিক ও কারিগরি কারণে তা সম্ভব হয়নি। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই চলাচল শুরু হবে। এছাড়া ইছামতি নদী সংস্কার ও পুনরায় খননের একটি প্রকল্প চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।’

জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাষ্ট্রপতির স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন সাঁথিয়া পৌরসভার মেয়র মাহবুবুল আলম বাচ্চু। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান বিশ্বাস, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আ স ম আব্দুর রহিম পাকন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম লাল, বেড়া পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট আসিফ শামস রঞ্জন প্রমুখ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে সাঁথিয়া পৌরসভার উদ্যোগে ইছামতি নদীতে গত ২২ সেপ্টেম্বর সপ্তাহব্যাপী নৌকাবাইচের উদ্বোধন করা হয়। গত বৃহস্পতিবার প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত খেলা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় বাগচী চ্যালেঞ্জার্স নামের নৌকা চ্যাম্পিয়ন ও শারিরভিটা এক্সপ্রেস নৌকা রানার্সআপ হয়। প্রতিযোগিতা দেখতে ইছামতির পাড়ে বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষের ভিড় জমে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.