ক্ষমতা ও এর অন্তরালের মিথ্যা

ক্ষমতা ও এর অন্তরালের মিথ্যা এখন প্রকাশিত এবং দিবালোকের মত স্পষ্ট দৃশ্যায়মান। এই দেশের মানুষ এখন আর মুখ্য ও প্রযুক্তি থেকে বঞ্চিত নয়। এই প্রযুক্তিই মানুষকে শিক্ষিত করেছে এবং সত্য ও মিথ্যা বুঝার সক্ষমতা দিয়েছে। তবে প্রযুক্তি কখনো কখনো আবেগের দংশনে বিবেককে জাগ্রত হতে না দিয়ে সর্বনাশ থেকে মহা সর্বনাশে নিমজ্জ্বিত হয়। তাই এই বিষয়ে সাবধানতা এখন আবশ্যকীয়।

আগে ইসলামের দোহাই দিয়ে মানুষকে ঠকানো হতো এবং সত্য ও নিত্য প্রয়োজনকে অপ্রয়োজনে বা হারামে পরিণত করা হতো। আমি এখানে ছোট্ট একটি উদাহরণ দিচ্ছি যে, “গভীর নলকুপ বসানো, ব্যবহার এবং মাইক ব্যবহার হারাম”। যার জন্য ঐ সময় মৌলানাদের রূসানলে পড়তে হয়েছে অনেককে। কিন্তু কালের পরিক্রমায় আজ আশির্বাদ হলো গভীর নলকুপ’র পানি এবং মাইকিং। বহুবিধ ব্যবহারে এই আবিস্কারগুলো মানব সভ্যতা এবং মানুষের তথা সৃষ্টির কাজে লাগছে। এমনকি সময়ের পরিক্রমায় এখন হারাম থেকে বৈধতায় পরিণত হয়েছে। তবে এই সকলই হয়েছে মানুষের জ্ঞানের বিকাশমান অব্যাহত যাত্রার অগ্রগামীতার ফলে। আজকের সমাজে জ্ঞান বিস্ফোরিত হচ্ছে তাই ঐসকল বস্তাবস্তি মিথ্যা কথার কোন মূল্যনেই। ক্ষমতায় যাওয়ার এমনকি নিজের আখের গোছানোর কাজে অসংলগ্ন মিথ্যাচার এখন কোন কাজে আসে না বরং হিতে বিপরীত হয়ে নিজের পায়েই কুড়াল মারার সামিল হয়।

আজকে একটি কথা বলতে চাই যে, বিএনপির চলমান আন্দোলনে বিভোর হয়ে মাতলামির একটি সিমানা নির্ধারণ করা জরুরী। জনাব ফকরুল সাহেব এখন ভেন্ডা পালগ হয়েছেন এবং তিনি আর ঘড়ে থাকতে পারেন না এমনকি সভ্য সমাজেও থাকতে পারেন না; এই ধরণের ভেন্ডা পাগলদের স্থান হওয়া উচিত পাবনার পাগল সংশোধনাগারে। তবে এই কাজটুকু জনতাকেই করতে হবে। গত বৃহস্পতিবার তিনি রোডমার্ট টু চট্টগ্রাম পদযাত্রায় একটু বেশী পাগলামী করে ফেলেছেন বৈকি। তিনি বলেছেন পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নাকি জনগণকে মেরে ফেলার জন্য করেছেণ। পরমানু অনেক শক্তিশালী ক্ষতিকর বস্তু যা থেকে বাংলাদেশের মানুষ ধ্বংস হয়ে যাবে। আর ঐ ক্ষতিকর বিদ্যুৎ কেন্দ্র করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বর্তমান সরকার। এই পাগলামির কোন মানে হয়। যেখানে উনারা বিদ্যুৎহীন অন্ধকারে নিমজ্জ্বিত করে দেশকে ধ্বংস করেছিল আর এই সরকার ক্ষমতায় এসে সেই কঠিন বিপর্জয় থেকে জাতিকে টেনে তুলে এখন একটি স্থায়ী সমাধানে পৌছার দ্বারপ্রান্তে উপনিত হয়েছে সেখানে এই ধরনের বক্তব্য খুবই বেমানান। আর বেহায়াপনার কোন সিমানা নেই তার প্রমান হলো আমাদের প্রীয় ফখরুল গংরা।

টেক বেক বাংলাদেশ কি ঐ অন্ধকারাছন্ন বিভিষিকাময় পরিস্থিতিতে যাওয়ার আকাঙ্খার উচ্চারিত ধ্বনী। ক্ষমতা যাওয়ার জন্য কতকিইনা করতেছেন এবং বলতেছেন যার প্রতিটি শব্দই বিষমিশ্রীত সুপেয় হিসেবে বিএনপি তথা সংঘটিত ক্ষমতালীপ্সু দলগুলোর জন্য উপযুক্ত টনিক হিসেবে কাজে লাগছে। ক্ষমতার একমাত্র মালিক আল্লাহ এবং আল্লাহই ক্ষমতা দান করেন এমনকি ভাগ বন্টন করে জাতির সেবার দায়িত্ব দেন। সেই দৃষ্টিতে জনাব ফখরুল সাহেবরা এইসবের তোয়াক্কা না করে বরং পৃথিবীর ক্ষমতাধরদের শলাকলা পূর্ণ করতে ব্যস্ত হয়ে রয়েছেন। জনগণের দু:খ ও দুর্দশার কথা বিবেচনা করে করণীয় ঠিক করতে যদি ব্যর্থ হন তাহলে ক্ষমতাতো দুরের কথা দেশ থেকে বিতারিতও হওয়ার সমুহ সম্ভাবনা জাগ্রত রয়েছে। এযাবতকালে নেয়া আপনাদের সকল পদক্ষেপই কিন্তু ব্যক্তি কেন্দ্রীক এবং ক্ষমতার লোভে মিথ্যাকে সত্যে পরিণত করার পায়তারা ছাড়া আর কিছুই নয়। খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়া এবং ইতিহাস বিকৃতি ছাড়া এমনকি যারে দেখতে নারি তার চলন বাকা আদলে রচিত রম্যরচনা ছারা আর কি বলেতে পারেন?। জনতা এবং সাধারণ মানুষ কি কারণে আপনাদের ক্ষমতায় আনতে এমনকি আপনাদের সঙ্গে একমত পোষণ করবে তা বলতে পারেন কি? দেশে রাজনীতি করার বা বিরোধিতা করার অনেক উপাদান রয়েছে যা জনগণের কল্যাণে নিয়োজিত; সেইসকল উপাদানগুলোকে তোয়াক্কা না করে বরং নিজেদের ক্ষমতার লোভকে সামলাতে না পেরে বেসামাল হয়ে দৌঁড়-ঝাপ দিচ্ছেন। এই করে নিজের এবং দেশের ও আভাগা জনগনের আরো ক্ষতি সাধন করার সমস্ত পথ উন্মুক্ত করেছেন।

স্বাধীনতাযুদ্ধ ও তৎপরবর্তী কালের ইতিহাস এবং ইয়াজ- উদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকারের আমলে আপনাদেরকে ক্ষমতায়ন করার এমন কোন চেষ্টারই বাকি রাখেননি। আপনারা চাননি স্বাধীনতা এবং আপনারা চাননি কখনো আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসুক আওয়ামীলীগ এর বর্তমান কান্ডারীসহ বিজ্ঞজনরা বেঁচে থাকুক কিন্তু রাখে আল্লা মারে কে? আল্লাহ যদি কাউকে ক্ষমতায় বসায় তাহলে কার সাধ্য আছে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করার। এখনও বলছি এই দেশের জনগণকে শ্রদ্ধা করুন এবং জনকল্যাণে নিয়োজিত হউন। জনগণের প্রয়োজনের দিকে দৃষ্টিদিয়ে সকল কর্মসূচি হাতে নিন; দেখবেন যা কল্পনাও করেননি তাই ফলস্বরূপ দেখতে পাবেন অথবা নিজেদের ঘরে তুলতে পারবেন। আর ষড়যন্ত্রের পথে নয়, আর মিথ্যার পথে নয়, আর নৈরাজ্যের পথে নয়, আর অন্ধকারের পথে নয় বরং আলোর পথে ফিরে আসুন এবং নিজ দেশের কল্যাণের পথে অগ্রসর হউন এবং দেশ মার্তৃকার তরে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করুন। ঘরে ফিরে আসুন এবং ঘরমুখী কর্মসূচীর দিকে মনযোগ দিন। ঘর, সমাজ, সংস্কৃতি, দেশ এবং উন্নয়নকে একসূত্রে গেথে আগামীর কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করুন এবং সেই সাথে জনগণকে সম্পৃক্ত করে সেবার মানুষিকতাকে সেবক কর্মচারীর মত কায্যে পরিণত করুন। তাহলেই আপনাদের সফলতায় স্বয়ং খোদা তায়ালা সহায়ক হবে এবং সফলতা দৃশ্যমান থাকবে।

সরকার খারাপ করছে তা নয় তবে সবই যে ভাল করছে তাও নয়। সেইদিক দিয়ে আমি বলতে চাই সফলতার শতভাগ জনগণ ভোগ করছে এবং করবে এর জন্য এই সরকারকে ধন্যবাদ। তবে এই সরকারকে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য মিথ্যা বা ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেয়ার কোন প্রয়োজন নেই। বরং শতভাগ সফলতার জন্য শুধু সতর্কতা এবং সজাগ থেকে গভেষনা ও মূল্যায়ন করে যে সকল কর্মসূচিতে এখনও স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে সেইদিকে দৃষ্টি দিয়ে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনুন। জনগণের ভোগান্তি এমনকি নিত্যপন্যের উদ্ধগতিতে লাগাম টানুন। নিরিহ ও নিরপরাধদের পাশে থাকুন। ইদুর বিড়াল খেলায় ইদুরের পক্ষ নিয়ে ইদুরকে পাহাড়ায় রাখুন ও রক্ষা করুন। নতুবা বিড়ালের থাবায় সকল ইদুর নিধন সম্পন্ন হবে এবং গণজাগরণ গঠানোর আর কোন ইদুর জাতীয় সমর্থক থাকবে না। যারা সরকারের পক্ষে গণজাগরণ ঘটায় সেই ইদুর শ্রেণী আজ নিস্পেসিত এবং কলূষিত। এখনই সময় এই নিরিহ ইদুর শ্রেণীর পরিত্রানের এবং সাম্য ও ভাতৃত্বের বন্ধনের মজবুতিকরণের। আমরা চাই বাংলাদেশ নিরাপদে এগিয়ে যাওক এই সরকারের হাত ধরেই এবং এই সরকারের মাধ্যমেই দলীয় ভাতৃত্ব মজবুত হউক। সকল ক্ষেত্রে ইদুর বিড়ালের সাম্য ও ভাতৃত্ব মজবুতকরণ করে আগামীর প্রতিকুলতা মোকাবিলা করে সত্যের জয় সুনিশ্চিত করুন। আওয়ামীলীগকে কেউ ক্ষমতায় বসায় না বরং সমস্ত প্রতিকুলতাকে ভেদ করে খোদা তায়ালার আশির্বাদ নিয়ে জনতার ত্যাগের মহিমায় জাগ্রত এবং উদ্ভাসিত হয়ে জাতির কল্যাণে নিবেদিত রয়েছে সেবা ও উন্নয়নের জন্য। আগামী দিনেও থাকবে তবে আমার সকল সম্পাদকীয়তেই আমি করণীয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট মতামত দিয়ে সংযুক্ত থেকে এগিয়ে চলার আশা জিইয়ে রাখছি।

ক্ষমতার অন্তরালের মিথ্যা এখন উদভাসিত এবং লজ্জার স্থানে পর্যবসিত। এই মিথ্যাকে এখন সমাহিত করার জন্য সকলকেই ঐক্যবদ্ধভাবে সত্যের প্রচারণা এবং কথা ও কাজে এবং চিন্তার মাধ্যমে সত্যকে জাগ্রত রেখে এগিয়ে যেতে হবে। একটি কথা মনে রাখতে হবে যে, কখনো কখনো একটি মিথ্যাকেও বার বার বলায় তা সত্যে পরিণত হয়। তাই মিথ্যা মিথ্যায় রূপদান করার দায়িত্ব এখন আমাদের সকলের। কোন ভাবেই মানুষকে ভুল করতে সুযোগ দেয়া যাবেনা। বরং ভুল করার আগেই তাকে সংশোধন করে পুরোপুরি সচেতন করতে হবে। আবেগ নয় বিবেক দিয়ে চিন্তা ও কর্ম সম্পন্নকরণে কাজটুকু সম্পন্ন করতে সত্যকে জাগ্রত রাখতে হবে। মূল্যবোধ ব্যবহার প্রচলন প্রবর্তন করতে হবে। মূল্যবোধহীন সমাজব্যবস্থাকে পরিবর্তন এবং পরিমার্জন ও পরিশোধন করে খোদায়ী মূল্যবোধে জাগ্রত রাখার প্রয়াস অব্যাহত রাখতে হবে। ক্ষমতার পালাবদল হবে তাই উপযুক্ত লোক প্রস্তুতকরণের কাজটুকু এই জাতিকেই করতে হবে। তবে ঘুনেধরাদের দিয়ে আর সমাজ পরিবর্তন হবে না বরং টেক বেক বাংলাদেশ হবে। সুতরাং এই জাতির কোন বিবেকসম্পন্ন মানুষই আর পিছনে ফিরে যেতে চাই না বরং সামনে এগিয়ে যেতে চাই এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা এবং মূল্যবোধসম্পন্ন কর্মকান্ডকে প্রাধান্য দিয়ে নতুন মুল্যবোধাচ্ছাদিত সেবক মানুষের সন্ধানে এখন বাংলাদেশ। সুতরাং বর্তমান সরকারকেই একজন সেবক তৈরীতে মনোনিবেশ করতে হবে। তবে এই ক্ষেত্রে দেশের জনগণকেও সচেতন হয়ে দায়িত্ব নিয়ে সরকারের সঙ্গে কর্মসম্পাদনে মনোনিবেশ করতে হবে। একদিন সেই সেবকের আগমন ঘটবে সেই দিনের প্রত্যাশায় আমরা সকলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.