ভারতের কাছে হেরে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ থেকে দেশে ফেরা সহজ হলো

প্রশান্তী ডেক্স ॥ বিশ্বকাপ চমকে নৈপূর্ণ বিবর্ণ বাংলাদেশও। পুনের মাঠেও বাংলাদেশের ভাগ্য পরিবর্তন হলো না! বিশ্বকাপের চতুর্থ ম্যাচে যেখানে ভারতের বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়ানোটা বেশ জরুরি ছিল, সেখানে কোহলি-রোহিতদের সামনে অসহায় হার দেখতে হয়েছে। বিশ্বকাপে সেমিফাইনালের স্বপ্ন দেখানো সাকিব আল হাসানের দল রীতিমতো ধুঁকছে। যদিও লাল সবুজ দলের অধিনায়ক ম্যাচটি খেলেননি। ড্রেসিংরুমে বসে নিরস বদনে দলের হার দেখেছেন।

বাংলাদেশের এমন অবস্থা হয়েছে যে, শেষ চারে জায়গা করে নেওয়ার মতো স্বপ্ন এখন অলিক! বাকি ম্যাচগুলোতে ঘুরে দাঁড়িয়ে জিতেই অলিক স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে। পাকিস্থান, নিউজিল্যান্ড কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলগুলোর বিপক্ষে তা করে দেখানো এই মুহূর্তে বড় কঠিনই।

অথচ স্বাগতিকদের বিপক্ষে তানজিদ তামিমের শুরুটা ছিল আশা জাগানিয়া। তরুণ ওপেনার সমালোচিত হওয়ার পর বড় ইনিংসের স্বপ্ন দেখিয়ে আশাহত করেছেন। একটু দেখেশুনে খেলতে পারলে ইনিংসটা আরও সামনের দিকে নিয়ে যেতে পারতেন। তারপরও তার হাফ সেঞ্চুরি অন্তত কিছু টা হলেও স্বস্তি দিয়েছে।

আরেক ওপেনার লিটন দাস ব্যাটে জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তানজিদের সঙ্গে ওপেনিংয়ে জুটি বেঁধে ভারতকে ভয়ও পাইয়ে দিচ্ছিলেন। নিজের ব্যাটে জবাবটা ভালো দিয়েও ৬৬ রানে থামতে হয়েছে। যদিও ৮২ বল খরচ করাটা চোখে পড়েছে। লিটন যে মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রেখে দেখেশুনে ব্যাট চালাতে পারেন, পারেন ইতিবাচক পারফরম্যান্স করতে, তা আজও দেখা গেলো। চার ম্যাচে দলের সবচেয়ে ভালো ব্যাটার এখন তিনিই!

এ দুজন ছাড়া মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ অভিজ্ঞতার মূল্যায়ন দেখিয়েছেন। যে কারণে দল ২৫৬ রানের ইনিংস গড়তে পেরেছে। তাওহীদ হৃদয়-মিরাজ সাহস করে দাঁড়াতে পারলে হয়তো লড়াকু ইনিংস হতে পারতো। হৃদয় কেন বিশ্বকাপে খেলছেন তা এখনও পরিষ্কার নয়, চার ম্যাচে একটিতেও নেই বলার মতো ইনিংস!

সাকিবের দলে না থাকা কিছুটা হলেও প্রভাব ফেলেছে। থাকলে হয়তো ব্যাট কিংবা বল হাতে কারিশমা দেখানোর সুযোগ ছিল। ছিল মাঠে নেতৃত্ব দেখানোর আরও একবার সুযোগ। কিন্তু তা হলো কই?

পুনের ব্যাটিং উইকেটে অন্তত ৩০০ রান করতে না পারলে জেতা কঠিনই। লিটন-তানজিদ শুরুতে দেখেশুনে খেলে দলের বড় ইনিংস গড়ার ইঙ্গিত দিলেও তা তো হয়নি। রোহিত-কোহলিরা অবলীলায় ব্যাট করে বাংলাদেশের বোলারদের শাসন করে সহজেই জিতে গেছেন। শরিফুল-হাসানরা পাত্তাই পাননি।

কোহলি তো সেঞ্চুরির লক্ষ্যে শেষের দিকে ৪-৬ নেওয়ার দিকে দৃষ্টি দিয়েছেন। শেষ বলে ৬ মেরে দলকে জিতিয়ে সেঞ্চুরিও পেয়েছেন। এমন নির্ভার ব্যাটিং বুঝি কোহলিকে দিয়েই সম্ভব! তার ৪৮তম সেঞ্চুরিতে ভারত বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের পথে অনেকটা এগিয়ে রইলো। 

পুনের মাঠে হাজারো দর্শকদের জয়োধ্বনি তখন শান্ত-নাসুমদের ‘পোড়াচ্ছিল’। সেই আফগানিস্থানের বিপক্ষে জয়ের পর থেকে তাদের সময় মোটেও ভালো যাচ্ছে না। সামনের দিকে কী হবে সেই চিন্তা এখনই ভর করছে। নানান আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে যাওয়া বাংলাদেশের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জই অপেক্ষা করছে। ২০১৯ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডে তিনটি ম্যাচে জিতেছিল। এবার তা করে দেখানোটা যে অনেকটা দূর পরাহত।

Leave a Reply

Your email address will not be published.