ইগো + ক্রোধ + লোভ = বিস্ফোরণ

ইগো এবং ক্রোধ ও লোভ একসঙ্গে মিলে এখন জ্বালাময়ী রূপ লাভ করেছে। আমাদের দেশে গত কয়েকদিন ধরে এই তিনের একত্রিকরণের ব্যবহারে অতিষ্ট সাধারণ এবং অতি সাধারণ জনজীবন। এই তিনের সঙ্গে সকল রাজনৈতিক দল এমনকি সরকার ও সরকারী দল একীভূত হয়ে সাধারণের উপর মরণোম্মুখ আচরণে ব্যতিব্যস্ত। কেউ শব্দ বোমায়, কেউ মুখের দোষিত বায়ূতে, কেউ পরিকল্পিত ধ্বংসাত্মক আক্রমনে, কেউ আবার জনজীবনের সঙ্গে উৎপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকা নির্ত প্রয়োজনীয় সামগ্রী এবং মৌলিক অধিকারের উপর হস্তক্ষেপ চালিয়ে স্তব্ধ করে দিতে চাচ্ছে সভ্য ও অগ্রসরমান সমাজ, রাষ্ট্র এবং উন্নয়কামী ব্যবস্থাকে।

বর্তমানে সমাজ এবং দেশ ও রাজনীতি এক অদৃশ্য দ্বন্ধে লিপ্ত রয়েছে। তবে সমাজ ও রাষ্ট্র এবং সরকার যদি এক হতে পারে এবং সরকার পরিচালনায় যারা যারা যুক্ত রয়েছে তাদেরকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়ে এগিয়ে নিতে পারে তাহলেই ঐ তিনের ঐক্য এবং দ্বন্ধ নিরসন করা সম্ভব হবে। তবে কেউ কাউকে দেখতে না পারার সংস্কৃতি থেকে বের হওয়ার সময় এখন। ক্রোধ এবং ঘৃণা ও লোভ সংযত করে নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার সময় এখন। তবে যে দ্বন্ধ পরিলক্ষিত হচ্ছে সেই দ্বন্ধের মুলউৎপাটন আবশ্যক। দ্বন্ধের গভীরে গিয়ে এর চিরস্থায়ী অবসান করার এখনই সময়। সাধারন জনগন কিন্তু দ্বন্ধের দহনে এবং নিস্পেষনে তিলে তিলে নি:শেষ হয়ে যাচ্ছে। বলা যায় শিলে পাটায় ঘষাঘষি মরিচের জীবন শেষ। হ্যা এই শেষ অবস্থান থেকে উত্তরণের জন্য কিছু একটা করা জরুরী।

ইগোর প্রয়োজনীয়তাই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো হারিয়ে যাচ্ছে। ইগোর কারণে একজন আরেক জনকে অস্বীকার করছে এবং তুচ্ছ ও তাচ্ছিল্য করে ক্রোধ ও ঘৃণায় পর্যবসিত করে লোভাতুর দৃষ্টি দিয়ে আগামীর অমংগলের ছক আটছে। এই অমংগল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এখনই প্রয়োজন ক্রোধ, ইগো, ঘৃণা এবং লোভ থেকে বের হয়ে আসা। নতুবা আগামীর বিপদ ভয়ংকর রূপ লাভ করতে আগুনে ঘি ঢেলে সহায়তা করবে বৈকি।

রাজনীতির ময়দানে একে অন্যকে সহ্য করার সংস্কৃতি প্রায় বিলুপ্তির পথে। শ্রদ্ধা, সম্মান এবং পারস্পরিক বোঝাপড়ার সময় প্রায় শেষ লগ্নে এসে ঠেকেছে। তাই এই চলমান রাজনীতি থেকে বের হয়ে এসে নতুন সংস্করণে ইগো + ক্রোধ + লোভ এই তিন বিবর্জিত বা ব্যাতিরেকে নতুন রাজনৈতিক সমাজ ব্যবস্থা কায়েমে গুরুত্ব দেয়া উচিত। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস কলঙ্কিত এবং কলুষিত আর এই কলুষিত কিন্তু করা হয়েছে। দিনে দিনে নি:ষ্কলুষ নির্ভেজাল রাজনীতিকে কলুষিত করা হয়েছে। সুতরাং পুনরায় সেই ইতিবাচক জোয়ারে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা আমাদেরকেই করতে হবে। সেই ১৯৭১ এবং তৎপুর্ববর্তী ও পরবর্তী রাজনৈতিক সমাজ, সংস্কৃতি ও জীবন ব্যবস্থায় ফিরে গিয়ে নতুন ইতিবাচক পরিবর্তন এবং পরিবর্তিত সংস্কৃতি খাপখাইয়ে অগ্রসর হওয়ার সময় এখনই।

চলমান রাজনীতি ও হরতাল, অবরোধ এবং খুণ, জালাও-পোড়াও এমনকি মুখনিসৃত বিষবাস্প নি:স্মরণ বন্ধ করা জরুরী। জনতা এবং সাধারণ খেটে-খাওয়া মানুষজন এইসকল আর চায় না এমনকি পছন্দও করেন না। তাই ঘুনেধরা পুরোনোকে দিয়ে নতুনকে সরানো বা পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। বরং নিজেদের বিলুপ্তি করার যাত্রারম্ভ মাত্র। তাই অপ্রীয় হলেও সত্য যে, বর্তমান শেখ হাসিনা এবং তাঁর নির্দেশনায় তাঁর সরকার যা করেছে তার সিকিভাগও পুর্ববর্তী সরকারগুলো করতে পারেনি। এমনকি কেউ চেষ্টা এবং পরিকল্পনাও করেনি। তবে যার দেখানো পথে বর্তমানের এইসকল হয়েছে সেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিকল্পনা এবং দুরদর্শীতায় আজ বাংলাদেশ উদ্ভাসিত। এইখানেই কবি নিরব। কারণ বর্তমানের কবিরা কিন্তু বর্তমানের বিপরীত শ্রোতে ঘঁ্যা ভাসিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। যেমন, খুন, ঘোষ, দুর্নীতি, রাহাজানি এবং জবরদখল, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, অন্ধকার আহাজারিতে ফিরে যেতে মরিয়া। আর এতে ইন্দন যোগাচ্ছে সুযোগ সন্ধানিরা এবং যাকে কেন্দ্র করে এগুচ্ছে সেই তিনিও এখন নিরব। তবে শিকারের শিকারী তারেক জিয়াই একমাত্র পারে বিএনপিকে ঐ নি:শেষিত দশা থেকে বাঁচাতে। কিন্তু তিনিই এই নি:শেষ পরিসমাপ্তির মহানায়ক বা খলনায়ক বা মীর জাফর হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবেন।

এই পরিস্থিতিতে আমার আহবান সকলে আমরা সকলের তরে ভাবিয়া প্রত্যেকে প্রত্যেকে সম্মান করি এবং প্রত্যেকের পরামর্শ ও কথা শুনে বহুলাংশে পাওয়া পরামর্শ এবং কথাগুলোকে কাজে লাগিয়ে সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণে কাজ শুরু করি। ক্ষমতার জন্য নয় বরং দেশের জন্য ও দেশের মানুষের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে দল মত নির্বিশেষে কাজ করি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অবারো ঐক্যবদ্ধ হয়। কাউকে সরাতে নয় বরং প্রত্যেকে প্রত্যেকের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে।

নির্বাচন নিয়ে আসুন আমরা সকলেই চলমান বর্তমানের সঙ্গে পরিচ্ছন্ন পরামর্শের আলোকে শতভাগ অংশগ্রহন নিশ্চিত করি। জেল, জুলুম নয় বরং ক্ষমা করে আলিঙ্গনে সাজার পরিবর্তে ক্ষমা ও ভালবাসার বন্ধন মজবুত করি। একে অপরের প্রতি বিশ্বাস ও ভরসা স্থাপন করে অগ্রহ ও সময় দিয়ে ফল ভোগে সহায়তা করি। শেখ হাসিনার সঙ্গে বসে সেইসকল সমস্যার কথা তুলে ধরে কার্যকর ও গ্রহণযোগ্য সমাধান নিয়ে একসঙ্গে কাজ করুন। অপসারন নয় বরং একসঙ্গে কাজের সুযোগ সৃষ্টি করে ইতিবাচক মনোভাবের কথা চিন্তা করে এখন থেকে কাজে নেমে পড়ি। আর নয় হম্বিতম্বি বরং এখানেই এর ইতি টেনে জনগণ ও জনআকাঙ্খা বাস্তবায়নে সম্মিলিত প্রচেষ্টার সম্প্রসারণ করি।

চলমান আন্দোলন এবং প্রতিহত এই দুটি শব্দকে বাস্তবতা থেকে বিতারিত করি এবং উভয়ে মিলে দেশটাকে গড়ি। বর্তমানে আমিও খাব না কিন্তু তোমাকেও খেতে দেবো না এই মনোভাব থেকে বের হয়ে এসে একসঙ্গে দুজনেই খাব এই চর্চায় মনযোগী হয়। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বৃহৎ উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করার আশায় সকলের তরে এই নিবেদন ও আবেদন এবং দাবি রাখছি। ইগো + ক্রোধ + লোভ এই তিনের এক মহা সমীকরণ থেকে বের হয়ে এসে আগামীর সমৃদ্ধি সুনিশ্চিত করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.