বেতন যা বাড়ানো হয়েছে তা নিয়েই কাজ করতে হবে

প্রশান্তি ডেক্স ॥ পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলনের পেছনে বিএনপি-জামায়াতের ইন্ধন আছে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি পোশাক শ্রমিকদের কথা একটু বলি। আজ তাদের রাস্তায় নামানো হয়েছে। আমার কাছে খবর আছে তাদের (শ্রমিক) এইভাবে রাস্তায় নামাবে এবং ওরাই (বিএনপি-জামায়াত) তাদের এজেন্ট ঢোকাবে, ওদের ক্ষতি করবে। দরকার হলে লাশ ফেলবে এবং দেশের অবস্থা আরও অস্থিতিশীল করবে। অনেক জায়গায় অনেক কিছু চেষ্টা করে যখন পারেনি, তখন এই কান্ডটা।

গত বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষ যখন শান্তিতে তখন এই বিএনপি আবার রাস্তায় নেমেছে অগ্নিসন্ত্রাস নিয়ে অশান্তি সৃষ্টি করতে। এই অশান্তির হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে হবে, দেশের মানুষকে বাঁচাতে হবে।

সহিংসতার বিরুদ্ধে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের অগ্রযাত্রা যেন কোনোমতেই থেমে না যায়। আজ যারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ঘটাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

পোশাক শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধিতে আওয়ামী লীগের সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, গত ১৪ বছরে ১৬শ’ টাকা মজুরি থেকে ৮ হাজার ৩শ’ টাকা তাদের মজুরি দিয়েছি। আর বর্তমানে আবার সেটা বাড়িয়ে ১২ হাজার ৫০০ টাকা করা হয়েছে। আবার প্রতি বছরে ৫ শতাংশ করে ইনক্রিমেন্ট হয়।

মূল্যস্ফীতির কারণে বেতন বাড়ানোর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সরকারি কর্মকর্তাদের ৫ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি করেছি, সেখানে পোশাক শ্রমিকদের বেতন ৫৬ শতাংশ বাড়ালো মালিকেরা। এখানে ৫ শতাংশ আর তাদের জন্য ৫৬ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। যে কারখানা তাদের রুটি-রুজির ব্যবস্থা করে, তাদের খাদ্য দেয়, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে। সেই কারখানায় হামলা, পোড়ানো, ধ্বংস করা। ১৯টি কারখানায় আক্রমণ করে ধ্বংস করেছে।

পোশাক শ্রমিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যেটা বাড়ানো হয়েছে তা নিয়েই তাদের কাজ করতে হবে। তারা কাজ করুক। যখনই সময় আসে তাদের সব রকম সুবিধা আমরা করে দেই। কিন্তু তারা যদি সেটা না করে, কারও প্ররোচনায় রাস্তায় নেমে… এরাই তো যারা উসকানি দিচ্ছে, তারাই তাদের (শ্রমিক) লাশ ফেলবে। এরাই এমন অবস্থা সৃষ্টি করবে যাতে তারা চাকরি হারাবে, কাজ হারাবে, গ্রামে গিয়ে পড়ে থাকতে হবে। এখন তারা কী চায়? কারখানা ধ্বংস হয়ে গেলে, উৎপাদন ব্যাহত হয়, রফতানি ব্যাহত হয় তাহলে তাদের কাজ থাকবে কোথায়? এটা তো তাদের বুঝতে হবে। আর উসকানিদাতা কারা?

উল্লেখ্য, ঢাকার মিরপুর ও সাভার এবং গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় বেতন বাড়ানোর দাবিতে ১৫ দিনের বেশি সময় ধরে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন ও বিক্ষোভ করছেন। গত মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ করে সরকার। তবে এ মজুরিতে শ্রমিক ও তাদের সংগঠন সন্তুষ্ট নন। এর জেরে গত বুধবার সকাল থেকে গাজীপুরের কোনাবাড়ী, বাইমাইল ও জরুনসহ বিভিন্ন এলাকায় তারা আন্দোলন ও বিক্ষোভ শুরু করেন। এদিন গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ী এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনরত পোশাক শ্রমিকদের সংঘর্ষে এক নারী শ্রমিক নিহত হন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.