কসবায় মাদরাসা ছাত্রী মৃত্যুর ঘটনায় পুরুষশুন্য গ্রাম; প্রতিপক্ষের বাড়িতে হামলা – ভাংচুর

ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় মাদরাসা ছাত্রী কিশোরী হোসনে আরা মৃত্যুর ঘটনায় মিথ্যা মামলা-হামলার ভয়ে একপ্রকার পুরুষ শুন্য হয়ে পড়েছে উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়নের নিমবাড়ী গ্রাম। নিহতের পক্ষের লোকজন বাড়িতে থাকলেও বুধবার ঘটনার পর থেকে পরবর্তী মামলা ও হামলা থেকে বাঁচতে গ্রাম ছেড়ে প্রতিপক্ষের পুরুষরা চলে যাওয়ায় আতংকে রয়েছে বাড়ী-ঘরে থাকা নারী ও শিশুরা।

গত বৃহস্পতিবার সকালে প্রতিপক্ষের লোকজনের বাড়িতে হামলা, ভাংচুর করার অভিযোগ উঠে ও নিহতের পক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গেলে সটকে পড়ে ভাংচুরকারীরা। পুলিশ এসময় কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেন।

ক্ষতিগ্রস্থ নোয়াব মিয়ার স্ত্রী মাজেদা বেগম বলেন, সকালে প্রতিপক্ষের বেশ কিছু লোকজন দেশীয় অস্ত্র দা, বল্লম ও লাঠিসোটা নিয়ে তাদের বাড়িতে ঢুকেই ভাংচুর শুরু করে আর বলতে থাকে বাড়ি থেকে চলে যেতে। নয়তো অবস্থা খুবই খারাপ হবে। এসময় হামলাকারীরা তার দুই মেয়ের গা থেকে জোরপূর্বক স্বর্ণালঙ্কার, চারটি এনড্রয়েড মোবাইল সেট ও ছেলেকে পুর্তগাল পাঠানোর জন্য জমি বিক্রি করা প্রায় ১৫ লাখ টাকা ঘর থেকে লুট করে নিয়ে যায়। হুমকি দিয়ে যায় রাতের বেলায় এসে গোয়ালের সব গরু নিয়ে যাবে। ভয়ে আছি রাতে কি হয়। তারা তাদের নিজের মেয়েকে টাকার লোভে মেরে এখন আমাদেরকে মারধর ও লুটতরাজ চালাচ্ছে।

তবে বিষয়টি অস্বীকার করেন নিহতের পক্ষেরই স্বাক্কু মিয়া নামে একজন। তিনি বলেন, সকালে উত্তেজিত নিহতের কিছু স্বজন প্রতিপক্ষের নোয়াব মিয়ার বাড়িতে হামলা ও ভাংচুরের চেষ্টা চালালেও খবর পেয়ে ছুটে গিয়ে তিনি এদেরকে প্রতিহত করে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। তাদের কোনো প্রকার ক্ষতি করার সুযোগ দেয়া হয়নি বলে জানান তিনি।

কসবা থানার ওসি রাজু আহমেদ বলেন, ভিসেরা প্রতিবেদন ও আলামতের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে তার বাবা নাসির মিয়া মামলা করেছেন। আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

হামলা ও ভাংচুরের বিষয়ে কসবা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ রাজু আহাম্মেদ বলেন, আমরা বিষয়গুলো দেখছি। ঘটনার সত্যতা পেলে যারাই জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানূগ ব্যবস্থা নেব। তবে নিমবাড়ী গ্রামে গুজবে কান দিয়ে সংঘর্ষে জড়ানোর চেষ্টা করলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

উল্লেখ্য, আধিপত্য নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নিমবাড়ি গ্রামে পান্ডবের গোষ্ঠি ও কাবিলের গোষ্টির মধ্যে দ্বন্দ চলে আসছিলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published.