ফলোআপ: কসবায় মাদরাসা ছাত্রী হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন \ প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে এই হত্যাকান্ড

ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ কসবা নিমবাড়ী গ্রামে মাদরাসা ছাত্রী হোসনে আরা রত্মা (১৪) হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচিত করেছে কসবা থানা পুলিশ। এ বিষয়ে বুধবার (২৪ জানুয়ারি) ১১টায় সংবাদ সম্মেলন করে কসবা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার দেলোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের লিখিতভাবে এ তথ্য জানান। এসময় কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ রাজু আহাম্মেদ, ওসি ( তদন্ত) আবদুল বাসেত ও তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক কামাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

তিনি জানান, পরিকল্পিতভাবে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজেরাই রত্মাকে মাথায় আঘাত করে হত্যা করে প্রতিপক্ষের রতন মিয়াসহ সাত জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছিলো। ওই মামলায় প্রধান আসামী রতন মিয়াকে আটক করেছিলো পুলিশ। পরবর্তিতে বাদি পক্ষের লোকজনের আচরন, হত্যার আলামত ও তথ্য প্রযুক্তি পর্যালোচনা করে নিহতের পক্ষের ইমন চৌধুরী (৩৫) কে গত সোমবার (২১ জানুয়ারি) আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পরে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করেন।

আদালতে ইমন ১৬৪ ধারায় হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেন। পরে ইমনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী গত মঙ্গলবার স্বাক্কু মিয়াকে আটক করে জেল হাজতে পাঠায় পুলিশ এবং হত্যাকান্ডের সকল রহস্য উদঘাটনে তার বিরুদ্ধে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছেন কসবা থানা পুলিশ।

স্বীকারোক্তিকে ইমন জানান, রত্মা হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী কাবিলের গোষ্ঠির শাহাদত হোসেন সাক্কু মিয়ার (৬০) নেতৃত্বে গত ১০ জানুয়ারি ভোররাতে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নাসির মিয়ার কিশোরী মেয়ে হোসনে আরা রত্মাকে মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকান্ডে ৯ জন জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ইমন। পরিকল্পিত এই হত্যাকান্ডের এক মাস আগেই ছক করা হয়েছিলো বলে জানায় সে ।

নিহতের পিতা নাসির মিয়ার সাথে মুঠোফোনে এই নাম্বারে (০১৭৬৬-৯৯৪৭১১) যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমার মেয়েকে যারাই হত্যা করেছে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী করছি।

উল্লেখ্য, উপজেলার নিমবাড়ী গ্রামে দীর্ঘবছর ধরে কাবিলের গোষ্ঠি ও পান্ডবের গোষ্ঠির মধ্যে আধিপত্য নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। এই বিরোধকে কেন্দ্র করে ২০১৭ সালে পান্ডবের গোষ্ঠির রহিজ মিয়া ও ২০২১ সালে রহিজের বড় ভাই রহিজ হত্যার প্রধান স্বাক্ষী ফায়েজ মিয়াকে হত্যা করে কাবিলের গোষ্ঠির লোকজন। এ নিয়ে দুটি হত্যা মামলা চলমান। চলতি মাসেই রহিজ হত্যার রায় হওয়ার কথা রয়েছে।

ওই মামলার সাজা থেকে বাঁচতে মামলাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে গত ১০ জানুয়ারি ভোররাতে ১৪ বছর বয়সি কিশোরীকে নির্মমভাবে হত্যা করে শাহাদত হোসেন স্বাক্কুর নেতৃত্বে কাবিলের গোষ্ঠির লোকজন। পরে পান্ডবের গোষ্ঠির রতন মিয়াসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে নিহতের পিতা নাসির মিয়াকে দিয়ে মিথ্যা হত্যা মামলা দায়ের করান ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.