নতুন সরকারের যাত্রারম্ভ…

নতুন সরকারের যাত্রারম্ভের মাধ্যমে আওয়ামীলীগ সরকারের এবং চলমান উন্নয়ন ও বিগত সরকারের ধারাবাহিকতা অব্যাহত। শেখ হাসিনার সরকার এবং আওয়ামী লীগ সরকার টানা ৪র্থ বার এবং মোট ৫ম বারের সুনাম অর্জন করে সুখ্যাতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যে যাত্রা শুরু হয়েছে সেই যাত্রার ধারাবাহিকতা ও ক্রমোন্নতির অব্যাহত যাত্রা দীর্ঘায়ীত করণের মজবুত হাতিয়ার এই দেশের জনগণ। এই জনগণের সঙ্গেই যুক্ত রয়েছে তৃণমূল আওয়ামী লীগ যারা দলের প্রয়োজনে এবং দলীয় কর্মকান্ডে নিবেদিত প্রাণ। এই নিবেদিত প্রাণদের মাঝেই কত বিরম্ভনা এবং অত্যাচর ও নির্যাতনের বিভিষিকাময় কাহিনী পর্দার অন্তরালে রয়ে যাচ্ছে তার খেয়াল কে রাখছে? দলীয় উপকারভোগী এবং দলীয় ক্ষমতার কাছের ও ক্ষমতাধারীদের এমনকি ক্ষমতারোহীদের কারণে মামলা-হামলায় নির্মম স্বীকারে পরিণত হয়েছে তাদের কান্ডারী কে? এই পরিণত হওয়াদের খোঁজ কে রাখে? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কি সেই সকল লোকদের খোঁজ রাখেন? তিনি কি তাদের অব্যাহতিতে ভুমিকা রাখেন?

যাদের অবদান এবং মুখ্য ভুমিকা ক্ষমতা স্থায়ীত্ব লাভ করে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অজকের অবস্থানে আসতে সহায়তা করে সেইসকল লোকদের খোঁজ রাখা এবং নূন্যতম অধিকার পাইয়ে দেয়া কি দায়িত্ববোধের মধ্যে পড়ে না। অথবা হামলা-মামলার হাত থেকে রেহাই দেয়ার প্রয়োজনীয়তার শতভাগ নিশ্চয়তাটুকু বজায় রাখার ব্যাপারে গুরুত্ব দেয়া মূল্যবোধে পড়ে না? যদি নাই পড়ে তাহলে আগামীর আওয়ামী লীগে অস্তীত্বের সংকট তৈরী হবে; বিশ্বাসের এবং আস্থার সংকট তৈরী হবে; নেতা ও কর্মী সংকটে অবতীর্ণ হবে। ক্ষমতার দীর্ঘস্থায়ীত্বে ধ্বসের সম্মুখীণ হবে। তবে সময় ও সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার আগেই এই বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে মোকাবিলা করা অতিবগুরুত্ব। দলীয় ভেদাভেদ এবং দলীয় ঐক্যে কোন শৈথিল্য বা ফাটল ধরানো যাবে না বরং ঐক্যকে মজবুতকরণে কাজ করতে হবে। দিন দিন মানুষ দল ও রাজনীতি বিমুখতায় পযবসীত হচ্ছে তাই এখনই সময় উপযুক্তভাবে মানুষকে দল ও রাজনীতির প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি এবং যোগ্য মূল্যায়ন এবং পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে কর্মী ও সমর্থকবান্ধব নেতা তৈরীতে ভুমিকা রাখতে পদক্ষেপ নিন। গুটি কয়েক স্বার্থলোভী ও হিংস্র এবং ভয়ঙ্কর প্রকৃতির নেতা ও কর্মী দ্বারা দলের আগামীর কল্যাণ সাধিত হবে না। তাই সময় থাকতে এখনই উপযুক্ত কাজে সংস্কার সাধণ করুন।

দ্রব্যমূল্য একটি মরণ ব্যাধি। তাই এই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির লাগাম কঠিনভাবে মোকাবিলা করুন। জনগণ এখন দিশেহারা তাই এই জনগণের সমৃদ্ধি এবং কল্যাণে আর দলের বা সরকারের দীর্ঘায়ূর স্থায়ীত্বের কল্যাণে ভুমিকা রাখুন। আয়-রোজগার বৃদ্ধিকল্পে কাজ করুন। জনগণের জন্য কর্মের সৃষ্টি ও কর্মের নিশ্চয়তা বৃদ্ধিকল্পে কাজ করুন। কর্মবিমুখতায় আর নিত্যপণ্য ও দ্রব্যমুল্যের উদ্ধগতিতে লাগামে কথায় নয় কাজে বিশ্বাসী হিসেবে বাস্তবে দৃশ্যমান কার্যক্রম সফলতা প্রদর্শনে কাজ করুন। নতুন সরকারের এই চ্যালেঞ্জগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে অতিতের সব রেকর্ড ভেঙ্গে উন্নয়নের সঙ্গে জনগণের জীবন মানোন্নয়ন ঘটিয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদী ক্রয়সীমার মধ্যে রেখে উঁচু নীচু ভেদাভেদের অবসান ঘটিয়ে সাম্যের বন্ধনে আবদ্ধ সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করুন। যারা অর্থনীতি এবং বাজার সংস্কৃতির ক্ষতি করে জনঅসন্তোষ সৃষ্টি করে তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে আইনের সুস্পষ্ট বাস্তবায়নের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন। খেয়াল রাখবেন “বেড়ায় যেন খেত না খায়”।

নেতিবাচক এবং নেতিবাচকতাকে যারা আশ্রয় ও প্রশ্রয় দিয়ে আসছিল এবং এই সরকারের অগ্রযাত্রায় এমনকি দেশোন্নয়নে বাধার কারণ হয়েছিল তাদের দিন শেষ। তাদের অস্তিত্বের বিলীনতা এখন সময়ের ব্যাপার। দেশের জনগণ এই নির্বাচনের মাধ্যমে তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং সেই প্রত্যাখ্যানে বিদেশীরাও আজ তাদের ভুল উপলব্ধি করে সরকারের সংঙ্গে আন্তরিকভাবে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তাদের বহিশত্রু এবং দেশীয় শত্রুর শত্রুতার অবসানের সময় এসেছে। তবে সাবধানতা এবং বিচক্ষনতাকে কাজে লাগিয়ে সকল উন্নয়ন প্রকল্প ও সহযোগীতা গ্রহণ বাঞ্চনীয়। কোনভাবেই যেন বন্ধুত্বের প্রসারিত হাতে কুমতলব আটতে না পারে সেইদিকে খেয়াল রেখে অগ্রসর হতে হবে।

সেবা ও সেবকের মানোন্নয়কল্পে সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রচলন ঘটানোর যাত্রা শুরু করুন। কারণ খোদায়ী মূল্যবোধ ব্যতিত মানুষ, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, রাজনীতি, সরকার এমনকি সর্বোপরি জনগণ কেউই নিরাপদ নয়। খোদায়ী মূল্যবোধের ব্যবহারে জাগ্রত করুন বিবেক এবং নৈতিক ঈমান ও আমল। সেবা ও দায়িত্ব পালনে সচেতনতা আনয়নে ধর্মীয় মূল্যবোধ গুরুত্বপূর্ণ। একমাত্র খোদায়ী মূল্যবোধই পারে সমাজ, রাষ্ট্র, জনগণ এবং সরকার ও রাজনীতি আর কর্মে ন্যায়পরায়নতা; শততা, আন্তরিকতা, ক্ষমা, ভালবাসা সমুন্নত রাখতে। নতুন সভ্যতার সংস্কৃতি দৃশ্যমান করতে। হারানো মূল্যবোধের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে। নতুন সভ্যতার ক্রমবিকাশ আনয়নকল্পে ভুমিকা রাখতে। তাই প্রথমেই দরকার সাংসদদের মাঝে খোদায়ী মূল্যবোধের জাগরণ ঘটানো। খোদায়ী মূল্যবোধ প্রশিক্ষণ দিয়ে মুল্যবোধসম্পন্ন খোদায়ী মানুষের পরিণত করানো। তারপর তাদের মাধ্যমে পরিবার, সমাজ ও দেশকে সেবা দেয়ার কাজ শুরু করুন। নিজস্ব জ্ঞান ও চিন্তা থেকে বেরিয়ে এসে খোদায়ী জ্ঞান ও চিন্তায় মনোনিবেশ করুন। খোদা তায়ালার সাহায্যে সকল কর্মকান্ড পরিচালনা করার ব্যবস্থা করুন। সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস, আস্থা ও নির্ভরতা প্রদর্শন করুন। সৃষ্টিকর্তাকে কাজ করার সুযোগ করে দিয়ে নিজেরা ব্যবহৃত হউন। সৃষ্টিকর্তা আপনাকে ও আমাকে ব্যবহার করেই সৃষ্টির কল্যাণের সকল কাজ সমাপ্ত করবেন। তাই আসুন সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য লাভে নিজেদেরকে নিয়োজিত করি এবং সেই সান্নিধ্যে থেকেই জনতার কল্যাণে স্ব স্ব দায়িত্ব পালন করি। নতুন সরকার ও সরকার প্রধানের নিকট এই আকুল প্রার্থনাটুকু রেখে শতভাগ সহাযোগীতা করার নিশ্চয়তা দিয়ে আগামীর তরে নতুন কিছু লিখার প্রত্যাশা রাখছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.