কসবায় কৃষকদের জিম্মি করে অতিরিক্ত দামে সার বিক্রি

ভজন শংকর আচার্য্য কসবা, (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় চলতি বোরো মৌসুমের শুরু থেকে কৃষকদের জিম্মি করে অতিরিক্ত দামে সার বিক্রি করছেন ডিলাররা। এতে করে কৃষকেরা বিপাকে পড়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, নির্ধারিত দামের বিষয়ে প্রতিবাদ করলে সারের  সংকট দেখান কৃষকদেও; এতে বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত দামে সার কিনছেন কৃষকেরা।

চলতি বোরো মৌসুমে ডিলার ও খুচরা বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশি দামে সার বিক্রির অভিযোগ করছে কৃষকরা। খুচরা বিক্রেতারা প্রতি কেজি সার পাঁচ থেকে ৬ টাকা বেশি নিচ্ছেন। ফলে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন । এতে এক প্রকার বাধ্য হয়েই বেশি দামে সার কিনতে হচ্ছে তাদের।

কৃষকদের অভিযোগ, রশিদের মাধ্যমে সার বিক্রির নিয়ম থাকলেও তা মানছেন না ডিলাররা। সরকার নির্ধারিত দামের চাইতে বস্তা প্রতি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা বেশি নিচ্ছে।

কসবা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১৩ হাজার সাতশত ৭৫ হেক্টর জমিততে  বোরো ধান চাষ করা হয়েছে । কৃষকরা এখন জমিতে  ব্যস্ত সময় পার করছেন।

জানা যায়, উপজেলায় বিসিআইসির ২০ জন এবং বিএডিসির ১৪ জন ডিলারের মাধ্যমে সার সরবরাহ করা হয়। সরকারিভাবে এক বস্তা ট্রিপল সুপার ফসফেট-টিএসপি ১৩৫০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও চাষিদের কাছে বিক্রি হচ্ছে ১৫০০-১৬০০টাকায় আর, মিউরেট অব পটাশ ও এমওপি সার প্রতি বস্তা ১০০০ টাকায় বিক্রির কথা থাকলেও বিক্রি হচ্ছে  ১৩০০ থেকে ১৪০০০  টাকায়। একইভাবে  ইউরিয়া সার এর দাম প্রতি বস্তা ১৩৫০ নির্ধারণ করা হলে ও বিক্রি হচ্ছে  ১৫০০ থেকে ১৭০০ টাকায় ডিএপি ১০৫০টাকায় নির্ধারণ করা হলেও বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকায়।

ন্যায্যমূল্যে সার কিনতে না পারায় উৎপাদন খরচ নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন উপজেলার কৃষকরা। ফলে বাধ্য হয়ে অল্প পরিমানে সার দিচ্ছেন জমিতে উপজেলার বিনাউটি  ইউনিয়নে  সৈয়দাবাদ  গ্রামের কৃষক আমজাদ ভুইয়া।

মনকাশাইর বাজারের ডিলার নাসির মিয়ার দোকান থেকে ৩২ টাকা কেজিতে ইউরিয়া সার কিনেছেন তিনি। সে হিসাবে বস্তার দাম হয় ১৬০০ টাকা। একই.  গ্রামের কৃষক হালিম খান বলেন ৩৫ টাকা ধরে ইউরিয়া সার কিনেছেন তিনি।

এদিকে সারের বাড়তি দামের জন্য ডিলার ও ব্যবসায়ীরা একে অপরকে দুষছেন। সঠিক মূল্যে সার বিক্রি করা হচ্ছে কি না তা যাচাই করতে কৃষি বিভাগের কোনো তদারকি নেই বলে অভিযোগ করেছেন কৃষকরা

কসবা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হাজেরা বেগম বলেন, উপজেলায় সারের কোনো সংকট নাই। নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে, খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহারিয়ার মুক্তার জানান, অসাধু ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে সারের বাড়তি দাম নিলে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.