টেকনাফ সীমান্তে মুহুর্মুহু গোলার বিকট শব্দে এপারে আতঙ্ক

প্রশান্তি ডেক্স ॥ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ টিকিয়ে রাখতে দুপক্ষে বোমা, মর্টারশেল হামলাসহ সব ধরনের আক্রমণ চলছে। ওপারের হামলার আওয়াজ ভেসে আসছে এপারেও। আতঙ্ক ছড়াচ্ছে সীমান্তে বসবাসকারীদের মধ্যে।

গত সোমবার (৮ এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং, হ্নীলা ও সাবরাং সীমান্তসহ পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় রাখাইনে মুহুর্মুহু বোমা বিস্ফোরণ ও মর্টারশেলের বিকট শব্দ এপারে শোনা গেছে। এ ছাড়া মেরিন ড্রাইভ সড়কের আশপাশে গোলার শব্দে স্থানীয় লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

টেকনাফ উপজেলা পরিষদের গোপনীয় সহকারী সৈয়দ হোছাইন মামুন বলেন, ‘দুপুরে অফিসে বসে কাজ করছিলাম। হঠাৎ পর পর দুটি বিকট শব্দে আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। একটু পরে বুঝতে পারি মিয়ানমারের চলমান যুদ্ধে গোলার বিকট শব্দ এপারে পাওয়া যাচ্ছে। সকাল থেকে বেশ কয়েকবার এ ধরনের গোলার শব্দ পাওয়া গেছে।’

সকাল থেকে ভারী গোলার বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, ‘রাখাইনের চলমান যুদ্ধে এপারে অনেক ভারী গোলার বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে। দিন দিন এ ধরনের গোলার বিকট আওয়াজ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে।’

নয়াপাড়া সীমান্তে বসবাসকারী আব্দুর গফুর বলেন, ‘সকালে ওপার থেকে আসা ভয়ংকর কয়েকটি শব্দ শুনেছি। মনে হয়েছে বোমা বিস্ফোরণের শব্দ। দিনের বিভিন্ন সময়ে বড় ধরনের কয়েকটি বিকট শব্দ শোনা গেছে।’

সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, ‘শনিবার সীমান্তের লোকজন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গোলাগুলির শব্দ শুনেছেন। নাফ নদ সীমান্তে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।’

টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘সকাল থেকে সীমান্তে ভারী গোলার বিকট শব্দ পাওয়া গেছে। অন্যদিনের তুলনার আজকের গোলার শব্দ বিকট।’

এদিকে মিয়ানমার মংডু ও বুথেডংয়ে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ চলছে। টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফ নদে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সদস্যরা সীমান্তে টহল বৃদ্ধি করেছে। যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সবসময় প্রস্তুত বিজিবি ও কোস্টগার্ড।

এ বিষয়ে কোস্টগার্ডের সদর দফতরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার খন্দকার মুনিফ তকি সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাখাইনে সংঘাত মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে সংঘাতের জের ধরে যাতে রোহিঙ্গা বা অন্য যেকোনও গোষ্ঠী বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে সে জন্য নাফ নদে কোস্টগার্ডের টহল জোরদার করা হয়েছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published.