একজন আমিনউল্লাহ ও তার অভিপ্রায়

মোহাম্মদ আমিনউল্লাহ, কুমিল্লার একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। মা একজন “রত্নগর্ভা” উপাধি প্রাপ্ত। সাত ভাই-বোনের মধ্যে মোহাম্মদ আমিনউল্লাহ ষষ্ঠ সন্তান।

তিনি কুমিল্লা জেলা স্কুল, নটরডেম কলেজ তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মার্কেটিং বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী  লাভ করেন এবং পরবর্তীতে একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ ডিগ্রী ও আইন বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করেন।

তিনি ব্যক্তিগত জীবনে দুইজন কন্যা সন্তানের জনক। স্ত্রী ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। সম্প্রতি করোনা ভাইরাস এ তিনি পরলোকগমন করেন।

তিনি বিশ্বব্যাংকের একটি উইং MGF (Matching Grant Facility) তে ৬ (ছয়) বছর সফলতার সাথে Financial & Management Consultant পদে দায়িত্ব পালন করেন। বিশ্বব্যাংকে কর্মরত অবস্থায় দেশের প্রায় ৪০০ শত রপ্তানিকারকদের Compliance Development এর জন্যে funding করার বিশাল এক অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দেশের আইটি ইন্ডাস্ট্রিকে কিভাবে ফান্ডিং করে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়া যাওয়া যায় তার একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনা করছেন তিনি।

পরবর্তীতে চাকুরী ছেড়ে দিয়ে পারিবারিক ব্যবসা গার্মেন্টস ও এগ্রো ব্যবসার পাশাপাশি তথ্য প্রযুক্তি খাতে “Alien Technology Limited” নামে একটি সফটওয়্যার কোম্পানী গড়ে তোলেন ২০০৪ সালে।

গত ১৭ বছর যাবত বেসিসের সাধারন সদস্য হিসেবে বেসিসে বহু স্ট্যান্ডিং কমিটির সাথে যুক্ত হয়ে বহু কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি বেসিসের IPR-(Intellectual Property Rights) Forum এর কনভেনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি পাশাপাশি আরও দুইটি স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি অতীতে আরো দুইটি স্ট্যান্ডিং কমিটির কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বেসিসের প্রায় অর্ধ শতাধিক সদস্যদের ট্যাক্স ও লিগ্যাল বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে আসছেন।

তিনি প্রায় ২৬টি কর্পোরেট কোম্পানীর লিগ্যাল এডভাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য; Robi Axiata, Bullian Mart, DCCI, BIDA, Sonali Bank, Janata Bank, Shilpa Bank, Krishi Bank, Rupali Bank, ICB, Bangladesh Bank এর EEF Unit, Flora, Chaldal অন্যতম।

তিনি ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলায় বেশ পারদর্শী ছিলেন। স্কুল ও কলেজ জীবনে একজন সফল এথলেটও ছিলেন।

বর্তমানে তিনি আইটি ব্যবসার পাশাপাশি আইনজীবী হিসেবেও সুপরিচিত।

তিনি একজন ভালো সংগঠক। ১৯৮৫ সালে  স্পোর্টস ও সামাজিক জনকল্যাণমূলক “ঢাকা ইয়ুথ ক্লাব” নামে একটি ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবেও বেশ অনেক বছর সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। গত ২১ বছর যাবত NEED ( National Education & Emancipation from Disability)নামে একটি NGO-ও প্রতিষ্ঠাতা করেন ও বর্তমানে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।

তিনি নির্বাচিত হলে;

১। একজন আইটি ব্যবসায়ী ও আইনজীবী হিসেবে বেসিসের সদস্য কোম্পানীগুলোর জন্য সরকারের সকল পলিসি লেভেলে কাজ করতে চান তিনি।

২। স্থানীয় বাজার সফটওয়্যার ও শিল্পের মেধাস্বত্ব আইন, কপিরাইট, প্যাটেন্ট, ডিজাইন, ট্রেডমার্ক, ট্যাক্স, ভ্যাট, ট্যাক্স এক্সেম্পশন, ইনসেন্টিভসহ আইটি খাতকে সর্ববৃহৎ খাতে পরিণত করা পর্যন্ত সরকারের সাথে দর কষাকষি করে ২০৪১ সাল পর্যন্ত কর এক্সেম্পশন এর দাবী আদায়ে ও সকল প্রকার আইন ও নীতিমালার উপযোগী সংশোধন এবং সঠিকভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বেসিসের পক্ষে সরকারকে সরাসরি সহযোগিতা করে ও পলিসি লেভেলে জোড়ালোভাবে কাজ করে তা নিশ্চিত করতে চান তিনি।

৩। সরকারের সাথে সকল নীতিমালা বাস্তবায়নে বেসিসের সংবিধান সময়োপযোগী ও দূরদর্শী সম্পন্ন করতে যথাযথ কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করছেন। তিনি তাঁর ৩২ বছরের চৌকষ অভিজ্ঞতাকে বেসিসের জন্যে কাজে লাগাতে চান। বেসিসকে ঢেলে সাজাতে চান। কর, ভ্যাট ও যেকোনো আইনী প্রক্রিয়া নিয়ে যেনো কোনো বেসিস সদস্যদের ভোগান্তি না হয় সে ব্যপারে কাজ করতে তিনি বদ্ধপরিকর। ইনসেন্টিভ ১০% থেকে ৮% এ নেমে এসেছে। সেটাকে পুনরায় ১০% এ পুনর্বহাল রাখার জন্যে জোড়ালোভাবে সরকারের সাথে দর কষাকষি করে নিশ্চিত করতে চান।

৪। তিনি বিশ্বাস করেন ব্যবসায়ীদের ব্যবসা সফল হওয়ার পিছনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি হলো সরকারের সাথে আইন ও নীতিমালা প্রণয়নে সমন্বয়ক হয়ে সংগঠনের জন্য তথা ইন্ডিস্ট্রির জন্য সহায়ক ও ব্যবসা বান্ধব নীতিমালা প্রণয়ন। আর তার জন্য প্রয়োজন ব্যবসায়ীদের সহায়ক নীতিমালা ও পলিসি লেভেলে সরকারকে বুঝানো ও সরকারের সাথে কাজ করা। তিনি মনে করেন আইসিটি ইন্ডাস্ট্রি সবেমাত্র রানওয়াতে টেকঅফ হতে যাচ্ছে। ঠিক এ সময়ে যদি সরকার আমাদের উপর করের বোঝা চাপিয়ে দেয়, তাহলে ইন্ডাস্ট্রি বড় হবে না। ইন্ডাস্ট্রি বড় না হলে এ দেশের আইটি খাত বড় হবে না। আর এই তথ্য ও প্রযুক্তি খাত বড় না হলে সত্যিকারের স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরী করাও কঠিন হয়ে পড়বে। তাই দেশকে স্মার্ট করতে হলে দেশের তথ্য ও প্রযুক্তি খাতের ক্রমবর্ধমান সবচেয়ে বড় সংগঠন এই বেসিসকে বড় করতে হবে। তাই তিনি এটা নিয়ে সরকারের সাথে কাজ করতে চান।

৫। আর বেসিসকে বড় করতে হলে বেসিসকে আরো Uniformed ও disciplined করতে হবে। বেসিস ইউনিফর্মড হলেই সদস্যরা আরো uniformed ও disciplined হবে, চাঙ্গা হবে, Inspired হবে।

আর সেই সাথে বেসিসকে আরো দক্ষ, স্মার্ট ও সময়পযোগী সচিবালয় তৈরী করতে চান। বেসিসে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে চান।

৬। তিনি নির্বাচিত হলে বেসিসে সবসময়ের জন্য ট্যাক্স, ভ্যাট, যেকোনো লিগ্যাল ইস্যু নিয়ে একটি হেল্পডেস্ক খুলবেন। যেখানে বেসিসের সকল সদস্যরা ফ্রী পরামর্শ পাবেন। আর অন্যান্য লিগ্যাল ইস্যুতে যদি কোনো আইনজীবী কাজ করে সেক্ষেত্রে বেসিস সদস্যদের জন্য ৫০% ডিসকাউন্ট এর ব্যবস্থা করবেন।

৭। প্রত্যেকটা সদস্য কোম্পানীর প্রোডাক্ট ও সেবাগুলোকে কপিরাইট, পেটেণ্ট, ডিজাইন, ও রেজিস্টার্ড ট্রেডমার্ক করে তাদের প্রোডাক্টের ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়াতে সকল প্রকার সেবা ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করবেন। তাহলে সফটওয়্যারও যে একটা সম্পদ ! সফটওয়্যারও যে একটা ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি যা কী না ব্যাংক মর্টগেজ রেখে বেসিসের সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোকে লোন দিতে পারে। সে ব্যপারে তিনি নিরলসভাবে কাজ করে করতে চান নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত।

৮। দেশের বেকার তরুণ-তরুণীদের তথ্য ও প্রযুক্তি খাত, বিদেশী ভাষা প্রশিক্ষণ দিয়ে জনশক্তি রপ্তানিতে বেসিসে ভূমিকা রাখতে চান। এই খাতই হতে পারে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সবচেয়ে বড় খাত।

৯। বেসিসের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আলাদা বা শ্রম আইনের সংশোধন করে একটা সময়পোযোগী আইন ও নীতিমালা প্রণয়নে সরকারের সাথে কাজ করে সেটা নিশ্চিত করতে চান।

১০। একটি সদস্য প্রতিষ্ঠান যেনো অন্য একটি সদস্য প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীকে লোভ দেখিয়ে না নিয়ে যেতে পারে, সেটার জন্য বেসিসে আলাদা একটি নীতিমালা প্রণয়ন করতে চান।

১১। আগামী দুই বছরে ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্রে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সাথে Collaboration করে কমপক্ষে ১০টি আইটি পার্ক/ভবন স্থাপন করার উদ্যোগ নিতে চান। যেখানে সকল সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো সহজ শর্তে ও সাশ্রয়ী মূল্যে অফিসের সুবিধাসহ আনুষঙ্গিক সকল সুবিধা ভোগ করতে পারে।

আপনাদের দোয়া, ভালোবাসা ও সমর্থন প্রত্যাশী।

আপনাদের সকলের

মোহাম্মদ আমিনউল্লাহ

ব্যবস্থাপনা পরিচালক

এলিয়েন টেকনোলজি লিমিটেড

টিম সাকসেস

Leave a Reply

Your email address will not be published.