উচ্চমূল্যে স্থিতিশীল চালের বাজার, সবজির বাজার চড়া

প্রশান্তি ডেক্স ॥ রাজধানীতে সব ধরনের সবজির দাম বেড়েই চলেছে। বেশির ভাগ সবজির কেজি এখন ৬০ থেকে ৮০ টাকার ওপরে। অন্যদিকে দুই সপ্তাহ আগে চালের যে দাম বেড়েছে তা এখন উচ্চমূল্যে স্থিতিশীল। ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম তুলনামূলক কম। এছাড়া ডাল-আলুসহ মুদি দোকানের পণ্য মোটামুটি স্বস্তিদায়ক।

গত শুক্রবার (৪ জুলাই) সকালে পুরান ঢাকার শ্যামবাজার, রায় সাহেব বাজার, নয়াবাজারসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে অধিকাংশ সবজির দাম কেজিতে ১৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বাজারে প্রতি কেজি চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, ধন্দুল ৮০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা এবং ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৮০ টাকায়।

এছাড়াও কাঁকরোল প্রতি কেজি ১০০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, টমেটো ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, গাঁজর ১৬০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারিতে বস্তা প্রতি সবজির দাম বেড়েছে। এ কারণে দাম বেড়েছে খুচরা পর্যায়েও। তাছাড়া গাড়ি ভাড়া, নিজের খরচ, দোকান খরচসহ দৈনন্দিন নানা রকম চাঁদা যুক্ত হওয়ায় এই দাম আরও বেড়ে যায়। দেখা যায়, গ্রাম পর্যায়ে যে সবজির দাম ৪০ থেকে ৫০ টাকা তা ঢাকায় ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হয়।

বাজারে কাঁচা সবজির দাম বাড়লেও পেঁয়াজ, রসুন, আদা, আলু, শসা, গাজর প্রভৃতি আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৫৫ থেকে ৬০, রসুন ১২০ থেকে ২০০, আদা ১৪০ থেকে ২২০ ও আলু ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অবশ্য অলিগলির দোকানগুলোতে এ দাম আরও কিছুটা বেশি।

দুই সপ্তাহের ব্যবধানে খোলা চিনির দাম কেজিতে ১০ টাকার মতো কমে ১০৫ টাকা হয়েছে। আর প্যাকেট চিনি কেজিতে ৫ টাকা কমে হয়েছে ১১৫ টাকা। মোটা দানার মসুর ডালের কেজি এখন ৯৫ টাকা, যা আগে ৫-১০ টাকা বেশি ছিল। মুগডালের দামও কেজিতে ১০-১৫ টাকা কমে ১৬০-১৬৫ টাকা হয়েছে। মসলার মধ্যে জিরার দাম আগের তুলনায় কেজিতে ৫০ টাকা কমেছে। তাতে প্রতি কেজি জিরা এখন ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাড়তি দামে স্থিতিশীল চালের বাজার। কোরবানির ঈদের পর থেকেই বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি মিনিকেট চালের দাম পাঁচ থেকে সর্বোচ্চ আট টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সেই দাম এখন পর্যন্ত আর কমেনি। উচ্চমূল্যেই সেই দাম স্থিতিশীল রয়েছে।

বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল এখন ৮৫ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঈদের আগে এসব চালের কেজি ছিল ৭৫-৭৬ টাকা। এছাড়া খুচরা বাজারে প্রতি কেজি স্বর্ণা ৫৫-৫৮ টাকা, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ জাতের চাল ৬০-৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছ, মুরগি ও মাংসের দাম স্থিতিশীল। পুরান ঢাকার রায় সাহেব বাজার ও নয়াবাজার ও কচুক্ষেত বাজার ঘুরে দেখা যায়, মাছ, মুরগি ও মাংসের দাম অনেকটা গত সপ্তাহের মতোই আছে। দামে তেমন কোনও পরিবর্তন নেই। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫০-১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সোনালি মুরগি ৩০০ টাকা এবং ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন ডিম ১২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। পাড়া-মহল্লায় এ দাম খানিকটা বেশি।

ব্রয়লার মুরগির দামের বিষয়ে পুরান ঢাকার বংশালের বাসিন্দা মোমেনা বেগম বলেন, ঈদের পর থেকেই পোল্ট্রি মুরগির দাম কম। ঈদকেন্দ্রিক অনেক মেহমান এসেছে। মুরগির দাম কম হওয়ায় বাজার করে স্বস্তি পেয়েছি। এখনও মুরগির দাম সাধ্যের মধ্যে আছে। সব সময় যদি এ দামে মুরগি কেনা যেতো তাহলে বেশ ভালো হতো।

এদিকে বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭০০-৮০০ টাকা ও খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ টাকা। মাছের মধ্যে প্রতি কেজি চাষের রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০, তেলাপিয়া ২৫০ থেকে ২৮০, পাঙ্গাশ ২০০ থেকে ২৫০, কই ২৮০ থেকে ৩০০, পাবদা ও শিং ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.