প্রশান্তি ডেক্স ॥ দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি প্রোগ্রাম চালুর নীতিমালা গত জুলাইয়ে চূড়ান্ত হওয়ার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। তবে আগামী অক্টোবরে এই নীতিমালা চূড়ান্ত হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

এর আগে গত জুন মাসে ইউজিসি জানিয়েছিল ‘জুলাই মাসে নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে। নীতিমালা অনুমোদন ও প্রকাশের পর শর্ত সাপেক্ষে দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু করতে পারবে।’
জানতে চাইলে ইউজিসির সদস্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘নীতিমালার কাজ এখনও চলমান। আরও দুই সপ্তাহের কাজ করতে হবে। আগামী মাসের (অক্টোবরে) শুরুর দিকে নীতিমালাটি চূড়ান্ত হবে বলে আশা করছি।’
ইউজিসি জানায়, নীতিমালা চূড়ান্ত অনুমোদনের পর দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পিএইচডি ডিগ্রির প্রোগ্রাম চালু করতে পারবে। যদিও সব বিশ্ববিদ্যালয় পিএইচডি প্রোগ্রাম চালুর অনুমোদন পাবে না। কারণ শর্ত পূরণ করা সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রোগ্রাম চালু করার অনুমোদন পাবে।
ইউজিসির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শর্ত পূর্ণ করতে পারবে হাতে গোনা কিছু বিশ্ববিদ্যালয়। যারা শর্ত পূর্ণ করতে পারবে তারাই ইউজিসির অনুমোদন নিয়ে এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু করতে পারবে।
গংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন আলোচনার পর ২০২৪ সালের ৪ জুন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু জন্য নীতিমালা প্রণয়নে একটি কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। গত ২২ মার্চ ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি (এপিইউবি) আয়োজিত এক মতবিনিময় সভা ও ইফতার মাহফিলে জানিয়েছিলেন, ‘উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়নে এ পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমরা আশা করি, দ্রুততম সময়ে কার্যকর নীতিমালা প্রণয়ন ও অনুমোদনের মাধ্যমে দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে সক্ষম হবে।’
পিএইচডি প্রোগ্রামের অনুমোদন পেতে যেসব শর্ত
ইউজিসির সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত নীতিমালায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি প্রদানের যোগ্যতা ও সক্ষমতা নির্ধারণে একটি মানদণ্ড (ক্রাইটেরিয়া) থাকবে। মানদণ্ড অনুযায়ী যোগ্য বিশ্ববিদ্যালয় এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রাম চালুর অনুমোদন পাবে।
যোগ্যতার মাপকাঠির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ নবায়ন থাকতে হবে। পিএইচডি গবেষণার জন্য অবকাঠামোসহ প্রয়োজনীয় সব সুযোগ-সুবিধা থাকতে হবে। প্রোগ্রাম চালু করতে হলে ডিসিপ্লিন অনুযায়ী সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক থাকতে হবে। পিএইচডি গবেষণার ক্ষেত্রে অন্য স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কো-সুপারভাইজার মনোনয়ন দিতে হবে।
পিএইচডি প্রোগ্রাম চালুর অনুমতি পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেন যেমন-তেমনভাবে পিএইচডি ডিগ্রি না করে, সে জন্য একটি বিশেষ নির্দেশিকা থাকবে নীতিমালায়। বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের বিষয়গুলো নির্ধারণ করে দেওয়া হবে পিএইচডি করানোর জন্য।
তবে এসব শর্তের কিছু যেমন বাদ যেতে পারে, আবার নতুন কিছু যুক্তও হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
পিএইচডি ডিগ্রি প্রোগ্রাম চালুর অনুমোদন পাওয়ার শর্তের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউজিসির সদস্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন গত জুন মাসে জানিয়েছিলেন, পিএইচডি গবেষণা যারা সুপারভাইজ করবেন, তাদের অবশ্যই গ্লোবালি কমপিটেটিভ শিক্ষক হতে হবে। যাদের গবেষণা টপ র্যাংকিং জার্নালে প্রকাশিত হয়, তারাই সুপারভাইজার হতে পারবেন। বাংলাদেশের কনটেক্সটে টপ শিক্ষক, যারা ভালো মানের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেছেন, প্রতি বছরই যাদের কিউ ওয়ান জার্নালে গবেষণা প্রকাশিত হয়, অন্য দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে কাজ করছেন, তাদের প্রত্যেককে স্থায়ী শিক্ষক হতে হবে, অধ্যাপক ও কমপক্ষে সহযোগী অধ্যাপক থাকতে হবে।